অনলাইন ডেক্স: 
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কমে যায়। অমনোযোগিতা বা স্মৃতিশক্তি হ্রাস এই বয়সজনিত পরিবর্তনের সাধারণ লক্ষণ। তবে এগুলো সবসময় ডিমেনশিয়া নয়। ডিমেনশিয়া হলো এমন এক অবস্থা, যেখানে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়— শুধু স্মৃতিশক্তিই নয়, ভাষাগত দক্ষতা, আচরণ, ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক স্থিতিও প্রভাবিত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমেনশিয়ার লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং রোগের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জটিল উপসর্গ দেখা দেয়। জীবনযাত্রার ধরন ও গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী এই রোগের প্রকোপও বাড়ছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি, যা ২০৩০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখে।
বাংলাদেশেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার। অনুমান করা হচ্ছে, ২০৩০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৮ লাখ ৩৪ হাজারে।
সাধারণত ৬০ বছর বয়সের পর থেকে এই রোগ দেখা দেয়। ষাটোর্ধ্ব প্রতি ২০ জনে একজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রতি পাঁচজনে একজন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন। যদিও বিরল ক্ষেত্রে ৬০ বছরের কম বয়সীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
চিকিৎসকদের মতে, ডিমেনশিয়া রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি হাসপাতালে ভর্তি রাখার প্রয়োজন নেই। রোগ নির্ণয়ের জন্য স্বল্প সময়ের জন্য ভর্তি করানো যেতে পারে। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো ডিমেনশিয়ার মূল কারণ শনাক্ত করে তার ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রদান করা।
যেসব ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়া ইরিভার্সিবল অর্থাৎ সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব নয়, সেখানে রোগীর যত্নদাতাকে রোগের প্রকৃতি, ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি ও সেবার ধরন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানো প্রয়োজন। কারণ, রোগীর বাকি জীবনের মান অনেকাংশে নির্ভর করে সঠিক যত্ন ও সহানুভূতিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার ওপর।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডিমেনশিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সময়মতো সঠিক রোগ নির্ণয়ই পারে এই জটিল মানসিক রোগের ঝুঁকি কমাতে।