অনলাইন ডেস্ক । সোমবার, ২৭ অক্টোবর
২০২৫
জ্বর একটি সাধারণ শারীরিক প্রতিক্রিয়া,
যা সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তন, ভাইরাল সংক্রমণ বা অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণে দেখা দেয়।
তবে জ্বর দেখা দিলেই অনেকেই না ভেবে দ্রুত প্যারাসিটামল বা অন্যান্য জ্বরের ওষুধ খেয়ে
ফেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অভ্যাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, জ্বর আসলে শরীরের প্রাকৃতিক
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে শরীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে
সংক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। তাই ৯৯ থেকে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর স্বাভাবিক
ধরা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয় না।
২০২৫ সালে জার্নাল অব ইনফেকশাস ডিজিজেস-এ
প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হালকা জ্বর (১০০–১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) শরীরকে সংক্রমণের
বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। তবে জ্বর যদি ১০৩ ডিগ্রির বেশি হয় বা তিন দিনের বেশি
স্থায়ী থাকে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
একই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, বারবার
ওষুধ খেয়ে জ্বর দমন করলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা
সতর্ক করেছেন, প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেনের অতিরিক্ত ব্যবহার লিভার ও কিডনির ক্ষতি
ঘটাতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ)-এর ২০২৪
সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ জ্বরের সময় নিজে
থেকেই ওষুধ সেবন করেন, যা ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি
বাড়ায়। বিশেষ করে ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রমণের ক্ষেত্রে শুধু জ্বর কমানো
যথেষ্ট নয়, বরং মূল কারণ নির্ণয় করা জরুরি।
হালকা জ্বরে করণীয়-
পর্যাপ্ত পানি, ওআরএস বা নারকেল পানি
পান করুন।
হালকা ও পুষ্টিকর খাবার যেমন খিচুড়ি,
স্যুপ, দই ইত্যাদি গ্রহণ করুন; তেলেভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন।
শরীরকে বিশ্রাম দিন, কারণ জ্বরের সময়
শরীরের শক্তি দ্রুত ক্ষয় হয়।
সংক্রমণ ছড়ানো রোধে নিয়মিত হাত ধোয়া
ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
শিশুদের ক্ষেত্রে ১০২ ডিগ্রি পর্যন্ত
জ্বর সাধারণত ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিন ও হালকা
পোশাক পরান।
চিকিৎসকেরা বলেন, জ্বর সবসময় ভয় পাওয়ার
বিষয় নয়। এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার অংশ। তবে যদি জ্বর মাত্রাতিরিক্ত
হয়, তিন দিনের বেশি স্থায়ী থাকে বা মাথাব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়,
তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
 
সূত্র: আজতক নিউজ