স্বাস্থ্য ডেক্স:
ডালের মতো উপকারী খাবার খুব কমই আছে। সহজলভ্য ও
কম দামের এই খাদ্য আমাদের প্রোটিনের অন্যতম বড় উৎস। প্রোটিনের পাশাপাশি এতে রয়েছে প্রচুর
কার্বোহাইড্রেট, যা শরীরে দ্রুত এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে। তাই তো আমাদের মতো নিম্ন
আয়ের দেশে ডাল এত জনপ্রিয়।
তবে এই উপকারী খাবার নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। বিশেষ
করে মুগ ও মসুর ডাল-কোনটি বেশি উপকারী, তা নিয়ে মতভেদ আছে অনেকের। চলুন, দেখে নেওয়া
যাক দুই ডালের গুণাগুণ-
মসুর ডালের গুণ
পুষ্টিবিদদের মতে, মসুর ডালের উপকারিতা অসীম। এতে
রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফাইবার, যা সহজেই হজম হয় এবং শরীরকে শক্তি জোগায়।
১ কাপ ভাঙা মসুর ডালে থাকে প্রায় ১৮০ ক্যালরি, ১০
গ্রাম প্রোটিন ও ৬ গ্রাম ফাইবার।
১ কাপ গোটা মসুরে পাওয়া যায় ১২০ ক্যালরি, ১৪ গ্রাম
প্রোটিন ও ৮ গ্রাম ফাইবার।
নিয়মিত মসুর ডাল খেলে হজমশক্তি বাড়ে, শরীরের পেশি
শক্তিশালী হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
মুগ ডালের গুণ
গুণের দিক থেকে মুগ ডালও পিছিয়ে নেই। তিন ধরনের
মুগ ডাল বাজারে পাওয়া যায়— হলুদ মুগ, ভাঙা সবুজ মুগ ও গোটা সবুজ মুগ। এর মধ্যে গোটা
সবুজ মুগ ও হলুদ মুগ সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
১ কাপ গোটা সবুজ মুগে থাকে ২৩৬ ক্যালরি, ১৬ গ্রাম
প্রোটিন ও ১৬ গ্রাম ফাইবার।
সমপরিমাণ হলুদ মুগে থাকে ১৪৭ ক্যালরি, ২৫ গ্রাম
প্রোটিন ও ১২ গ্রাম ফাইবার।
মুগ ডাল সহজে হজমযোগ্য এবং খুব দ্রুত রান্না করা
যায়— প্রেশার কুকারে মাত্র ৫ মিনিটেই তৈরি করা সম্ভব।
মসুর না মুগ - কোনটি খাবেন?
পুষ্টিগত দিক থেকে মুগ ও মসুর ডালের মধ্যে পার্থক্য
খুবই সামান্য। তাই গুণের বিচারে একটিকে অন্যটির চেয়ে বেশি বলা কঠিন। বরং দুই ডালই পালাক্রমে
বা মিশিয়ে খেলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের ঘাটতি মেটানো সম্ভব।
এ ছাড়া দুই ডালই এলডিএল (ক্ষতিকর) কোলেস্টেরল কমাতে
সাহায্য করে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং ফ্যাট প্রায় নেই বললেই চলে-ফলে ওজন কমানোর
ডায়েটেও এটি অনায়াসে রাখা যায়।
সংক্ষেপে:
মুগ ও মসুর দুটোই শরীরের জন্য সমান উপকারী। দুই
ডাল মিলিয়ে খেলে পুষ্টির ভারসাম্য আরও ভালো হয়। হৃদ্রোগ প্রতিরোধ, হজমে সহায়তা ও ওজন
নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকর এই দুই ডাল।