অনলাইন
ডেস্ক:
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য, যশোরের শতবর্ষী বীর সৈনিক
ল্যান্স কর্পোরাল মো. শামসুদ্দিন (১০১) আর নেই। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া
ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তার
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছেলে গোলাম মোস্তফা হেলা।
মো.
শামসুদ্দিন আমৃত্যু ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি ভাতা পেয়ে আসছিলেন। তার বাড়ি
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামে হলেও জন্ম ১৯২৪ সালের জুন মাসে
ভারতের মাদ্রাজে। তিনি দীর্ঘ সময় যশোর শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলায় মেয়ের বাড়িতে অবস্থান
করতেন।
তার
জীবনের উল্লেখযোগ্য একটি অধ্যায় ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। মাত্র ১১ বছর বয়সে, ১৯৩৫ সালে,
ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দেন তিনি। তার সৈনিক নম্বর ছিল ৬৪১৪৬০। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫
সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর তিনি বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন ময়দানে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেন।
স্মৃতি রোমন্থনে তিনি জানিয়েছিলেন, একবার সিঙ্গাপুরে প্রায় তিন হাজার সহযোদ্ধার সঙ্গে
অবরুদ্ধ অবস্থায় তিন মাস যুদ্ধ চালিয়ে যান তারা।
বিশ্বযুদ্ধের
পরও সেনাবাহিনীর চাকরিতে থেকে যান শামসুদ্দিন। দেশভাগের পর তিনি যোগ দেন পাকিস্তান
সেনাবাহিনীতে। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন কিছুদিন। এরপর অবসর নেন এই অভিজ্ঞ যোদ্ধা।
চলতি
বছরের ১৭ মার্চ তার সামরিক ইতিহাস জানার পর যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম তার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ফুলেল শুভেচ্ছা ও ঈদ উপহার হিসেবে নগদ অর্থ প্রদান করেন শামসুদ্দিনকে।
জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, “এমন একজন মানুষ এ শহরে (যশোর) অবস্থান করেন, এটা খুবই গর্বের
বিষয়।”
শামসুদ্দিনের
স্ত্রী জাহেদা খাতুন ১৯৯৯ সালে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে
গেছেন।জাতি এক অভিজ্ঞ ও বীর যোদ্ধাকে হারালো।