অনলাইন ডেক্স:
সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে তেঁতুলিয়ায় ট্রলার তেকে পরে নিঁখোজ হয়েছেন ইমরান শরীফ নামে ১ জন; অপরদিকে মেঘনায় ২টি ট্রলার নিখোঁজ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভোলার ১০টি নৌপথে লঞ্চ ও ফেরি
চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন
কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ
নৌ-করপোরেশন-বিআইডব্লিউটিসি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে জেলার কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি, কোথাও
মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা বাতাস বইছে। মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী উত্তাল রূপ ধারণ
করেছে। জেলার নিম্নাঞ্চল বিশেষ করে বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা ৩ থেকে ৪ ফুট
উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনায় পানি বৃদ্ধির কারণে ভোলার ইলিশা লঞ্চ ঘাটের গ্যাংওয়ের
কিছু অংশ ডুবে গেছে। ফলে যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে দেখা গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুক্রবার সকাল থেকে ইলিশা-লক্ষ্মীপুর,
দৌলতখান-আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-মনপুরা, মনপুরা-ঢাকা, হাতিয়া-ঢাকা,
চরফ্যাশন-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ ১০টি পথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএয়ের ভোলা নদী বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক মো.
জসিম উদ্দিন। এদিকে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব নৌ-পথে
চলাচলকারী যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা।
ছুটিতে বাড়িতে এসে কর্মস্থলে
ফিরতে ইলিশা লঞ্চঘাটে বেশকিছু যাত্রী অপেক্ষায় আছেন। তারা নোয়াখালী,
লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের যাবেন বলে জানিয়েছেন। কয়েকজন যাত্রী জানান, বৈরী আবহাওয়ার জন্য লঞ্চ বন্ধ থাকায় তারা
কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। ঘাটে এসে জানতে পারেন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার
কারণে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে তারা এখন
দুশ্চিন্তায় আছেন। আবার কেউ কেউ দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে
গেছেন। বিআইডব্লিউটিএয়ের পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট
নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর ও নদী বন্দরে এক নম্বর সতর্ক
সংকেত চলছে। যার ফলে মেঘনা নদী বেশ উত্তাল। তাই অভ্যন্তরীণ ১০টি পথে
যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে সকাল থেকে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর নৌপথে ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ভোলা সদর ও চরফ্যাশন উপজেলায় মেঘনা নদীতে দুটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ওই দুই ট্রলারে থাকা ১২ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার ইলিশা ঘাট সংলগ্ন এবং দুপুরে চরফ্যাশন
উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ইউনিয়নের পূর্ব ঢালচর এলাকায় নদীতে এই ঘটনা ঘটে
বলে জানায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। ঢালচর এলাকার ইব্রাহিম মাঝি বলেন, সকালে জাফর মাঝি তার ট্রলারে ছয়জন
মাঝি-মাল্লা নিয়ে মাছ শিকার করতে নদীতে যান। পরে দুপুরে জাল টানার সময়
ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে ট্রলারে থাকা সব জেলে নদীতে ভাসতে থাকেন। এ সময় তাদের থেকে কিছুটা দূরে জাফর মাঝির অপর একটি ট্রলার তাদের দেখে এগিয়ে গিয়ে সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সকালে নদী কিছুটা শান্ত থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে
বাতাসের তীব্রতা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি আর বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। নদী
বেশ উত্তাল থাকায় ট্রলার নিয়ে নদীতে যাওয়া বিপজ্জনক। ইলিশা নৌ-থানার ওসি মো. শাহিন উদ্দিন বলেন, বেলা ১১টার দিকে মাছ শিকার
শেষে তীরে ফেরার সময় ইলিশা ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ছয় জেলেসহ একটি ট্রলার
ডুবে যায়। তাৎক্ষণিক পাশের একটি ট্রলার ছুটে গিয়ে সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে। পূর্ব ঢালচরের চর কুকরি-মুকরির নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শুকল্যাণ
বিশ্বাস বলেন, দুপুরে একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই ট্রলারে থাকা
ছয় জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো ধরনের প্রাণহানি হয়নি। অপরদিকে বাউফল থানার কালাইয়া নৌ পুলিশ জানায়, দুপুর ৪টার দিকে নিমদী থেকে কালাইয়া যাওয়ার পথে কচুয়া পয়েন্টে ট্রলার থেকে পরে নিখোজ হওয়া ইমরানকে পাওয়া যায়নি। নৌ পুলিশ ফায়ার সার্ভিস ও জেলা শহর পটুয়াখালী থেকে ডুবরী দল এখন পর্যন্ত দেহবশেষ খুঁজে পায়নি।