বিডিফেস২৪ ডেক্স:
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের
প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক
দলের নেতারা আজ ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এ স্বাক্ষর করেছেন।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে
এ ঐতিহাসিক স্বাক্ষর গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই সনদকে ২০২৪
সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রণীত একটি নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাতটি মূল অঙ্গীকার ঘোষিত হয়েছে, যা নিম্নরূপ:
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনা:
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে হাজারো
মানুষের আত্মত্যাগের ভিত্তিতে গৃহীত রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
সংবিধানে সংযুক্তির অঙ্গীকার:
এই সনদকে সংবিধানের তফসিল হিসেবে বা যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত
করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাক্ষরকারীরা।
সনদের বৈধতা প্রশ্নে আপত্তি না তোলা:
সনদের বৈধতা বা প্রয়োজনীয়তা নিয়ে
আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা হবে না, বরং তার আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা
নিশ্চিত করা হবে।
গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি:
১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক
ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে।
শহীদদের সম্মান ও বিচার:
আন্দোলনে শহীদ ও নির্যাতিতদের যথাযোগ্য
মর্যাদা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, এবং
দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও ব্যবস্থার সংস্কার:
সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারে আইন সংশোধন ও প্রণয়ন করা
হবে।
তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন:
সনদের আওতায় অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব এমন সব সিদ্ধান্ত দ্রুততম
সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই ঐতিহাসিক সনদে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে বিশ্লেষকদের মত। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক দলিল নয়, বরং জনগণের দীর্ঘ সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও আশা-আকাঙ্ক্ষার
প্রতিফলন।