ঈশ্বরগঞ্জ সংবাদদাতা:
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ
উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি
ও পার্সেন্টেজ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে তিনি “দুর্নীতির বরপুত্র” হয়ে
উঠেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর)
বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ উত্থাপন করেন চেয়ারম্যানরা।
এর আগে সকালে তারা ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল
করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত
বক্তব্য পাঠ করেন সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থিত
ছিলেন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা, আঠারবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুবের আলম
কবীর রুপক, মাইজবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বাবুল, মগটুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান
শিহাব উদ্দিন আকন্দ, সোহাগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সম্রাট কবীর বিপুল এবং উচাখিলা ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম। উপস্থিত না থাকলেও বাকি চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর
অভিযোগপত্রে ছিল বলে জানানো হয়।
চেয়ারম্যানদের অভিযোগ,
রেজাউল করিম উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকির সুযোগ নিয়ে প্রতিটি প্রকল্প
থেকে ঘুষ আদায় করেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থানসহ সব ধরনের প্রকল্পেই
তিনি “অফিস খরচ” বাবদ বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন।
তাদের দাবি, প্রতিটি
প্রকল্প থেকে রেজাউল করিম শতকরা ২৫ শতাংশ নগদ অর্থ এবং অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ ভিন্ন খাতে
কেটে নেন। ভ্যাট ও আয়করের নামে যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়, তা সরকারি খাতে জমা না দিয়ে
আত্মসাৎ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
চেয়ারম্যানদের আরও অভিযোগ,
পিআইও অফিস থেকে বরাদ্দ পাওয়া টাকার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ অফিস খরচ হিসেবে দিতে হয়। বিল-ভাউচার
ও মাস্টাররোল সমন্বয়ের নামে প্রতিটি প্রকল্প থেকে তিন হাজার টাকা করে অতিরিক্ত আদায়
করা হয়। এমনকি মসজিদ, মন্দির ও মাদরাসার বরাদ্দেও ছাড় দেওয়া হয় না।
তাদের মতে, এসব কারণে
অনেক প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে
চাইলে পিআইও রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “আপনার সঙ্গে সামনাসামনি কথা হবে, সব বলব।
চেয়ারম্যানরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।”
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন, “সব চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরসহ লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”