অনলাইন ডেক্স:পাবনা জেলার চাটমহর উপজেলার প্রাণ ডেইরি হাব সেন্টার থেকে দুই হাজার ৫০০
লিটার ভেজাল দুধ জব্দ করেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাণের
তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আরেক অভিযানে ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এনএসআই। সোমবার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের
লাঙ্গলমোড়া গ্রামে এবং ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের হাব সেন্টারে এই অভিযান
পরিচালনা করা হয় বলে জানান চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা
নাসের চৌধুরী । অভিযানে এনএসআই পাবনার সহকারী পরিচালক এবিএম লুৎফুল কবিরের নেতৃত্বে ১৭
সদস্যের দল, পাবনার অতিরিক্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা
নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. আসলাম হোসেন ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ড পাওয়ারা হলেন- ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের শহিদুল সরকারের
ছেলে প্রাণের এরিয়া ম্যানেজার শামসুল আলম (৩৬), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর
উপজেলার চক চিথুলয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে জহির রায়হান (২৭) এবং
সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হোসাইন (৩৫)। তাদের
কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- লাঙ্গলমোড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম
(৪৫), সেকেন্দার আলীর ছেলে খলিলুর রহমান (৬৫), সাইদুল ইসলামের ছেলে লিটন
হোসেন (১৯), হযরত আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৫০), খবির উদ্দিনের ছেলে রুবেল
হোসেন (২০) এবং রিফাজ আলীর স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৩৫)। ইউএনও মুসা নাসের বলেন, “গোপন খবর পেয়ে সকালে লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ভেজাল
দুধ তৈরিকারকদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে গেলেও এক
নারীসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় ভেজাল দুধ, তেল ও বিভিন্ন প্রকার
কেমিকেল। তিনি বলেন, আটকদের মধ্যে খলিলুর রহমানের ছেলে রুবেল হোসেনকে এক সপ্তাহের
মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করানোর শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রুবেলের
দায়িত্ব নেন তার বড় ভাই আইনজীবী এরশাদ আলী। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে
আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইউএনও মুসা নাসের বলেন, এ ঘটনার পর দুপুরে উপজেলার ছাইকোলা চৌরাস্তা
এলাকায় প্রাণ কোম্পানির চিলিং সেন্টারে (হাব সেন্টার) অভিযান পরিচালনা করা
হয়। সেখানে তেল ও ডিটারজেন্টযুক্ত দুধ পাওয়া যায়। ভেজাল দুধ সংগ্রহ, মজুদ ও সরবরাহের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে
হাব সেন্টারের তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় বলে তিনি নিশ্চিত করেন। পরে হাব সেন্টারে সংরক্ষিত প্রায় আড়াই
ঝে মাঝে এ ধরনের অভিযানের পরও ভেজাল দুধ
বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে সারাদেশে পৌঁছে যাচ্ছে; যা স্বাস্থ্যের জন্যও
মারাত্মক ক্ষতিকর। এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “গত
তিন-চার মাস আগে আমরা কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে দুধ নেওয়া বন্ধ করে দেই।
কারণ, আমাদের নিজস্ব পরীক্ষায় তাদের দুধে অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পাই। এরপর
থেকে ওই চক্র আমাদের বিরুদ্ধে লেগে ছিল। ওই চক্রটি আমাদের বিপদে ফেলতে
পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। এ বিষয়ে আমাদের
অনুসন্ধান চলছে।